আমরা বদলালেই দেশ বদলাবে

খুব ছোটবেলা থেকেই পাকিস্তানকে ঘৃণা করতে শিখেছিলাম, খুব অবাক করার বিষয় কোন কারন ছাড়াই তখন থেকেই আমি ইন্ডিয়া এবং ইন্ডিয়ানদের সহ্য করতে পারতাম না।
এস.এস.সির পর থেকে যখন দুনিয়ার রূপ-সৌন্দর্য ব্যাপকভাবে দেখতে শুরু করি তখন থেকেই ভাবি, ইন্ডিয়ার রূপ এত নিম্নমানের জঘন্য হয় কিভাবে? তিস্তা পানি চুক্তি, সীমান্তে হত্যা, বাংলাদেশীদের হেয় করা, প্রতিবেশী দেশ হিসেবে অবজ্ঞা করা, মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে বাজে ধারণা পোষন করা, ভূমি দখল করাসহ আরো অনেক বিষয় আছে যার কারনে ইন্ডিয়াকে আমি সহ্য করতে পারি না। অবাক করার বিষয় এই দেশটার সাথে শুধু আমাদেরই না, ইন্ডিয়ার বাকি প্রতিবেশী দেশ মায়ানমার, নেপাল, ভূটান, শ্রীলংকা এমনকি চীনের সাথেও সম্পর্ক ভাল না। আর পাকিস্তানের সাথে কি রকম সম্পর্ক তা আলাদা করে বলার মতো কিছুই নেই। এতকিছুর পরেও এই দেশের বিশেষ শ্রেণীর মানুষের এতো ইন্ডিয়া প্রীতি আমাকে খুবই অবাক করে।
এই শ্রেণীর মানুষগুলো কিছুদিন পরপর আওয়াজ তুলে পাখিড্রেসের বিরুদ্ধে, সীমান্তে হত্যার বিরুদ্ধে, ভারতীয় মিডিয়ায় বাংলাদেশকে কটাক্ষ করার বিরুদ্ধে।
ক্ষনিকের প্রতিবাদে ভারতীয় পণ্য বর্জন করার আহ্বান জানায়, ক্ষুদ্ধচিত্তে শপথ নেয় এয়ারটেলের মত ভারতীয় কোম্পানির সীম বর্জন করার।
কিন্তু বাস্তবতা সম্পূর্ণ বিপরীত।
রাতের পর রাত চলে যায় সেই সীম দিয়েই কথা বলতে বলতে, আমরা ইন্ডিয়ান ফেসওয়াশ ছাড়া মুখ ধুতে পারি না, পটেটো বা আলুজে নয়, আমাদের রুচি আটকে থাকে লেস চিপসে।
নিজে হলে যেয়ে ছবি না দেখলেও চাই বলিউড মানের ছবি দেখতে। নিজের দেশ না ঘুরলেও ইন্ডিয়াতে যাওয়া চাইই চাই। ১৬ জিবির প্রায় পুরোটাই থাকে ইন্ডিয়ান সিংগারদের গানে সয়লাব। নিজেদের হলিউড নয়, বলিউডের নায়ক/নায়িকাদের সাথে তুলনা করতে বেশি পছন্দ করি।
প্রথমদিকে আইপিএলে ম্যাশরাফিকে ও সাকিবকে না খেলিয়ে বসিয়ে রাখা, ফুটবলে বাংলাদেশের সেরা খেলোয়ার এবং জাতীয় দলের অধিনায়ক মামুনুলকে মাঠে না নামানো আমাদের শুধু সাময়িকের দুঃখই দেয়। কিন্তু তারপর আমরা ম্যাচ না দেখার মতো সাহস দেখাতে পারি না। কোন ইভেন্টে যোগ দেয়া পর্যন্তই আমাদের দৌড়।
আমি বলছিনা বিদ্রোহ শুরু করেন। কিন্তু এতোটুকু মাথায় রাখেন যেই দেশের পণ্য আমরা টাকা দিয়ে কিনছি তারা সেই টাকাকেই আবার গুলি বানিয়ে সীমান্তে ফেরত পাঠাচ্ছে।
তাই ক্ষণিকের দেশপ্রেমিক নয়, আসুন আসল দেশপ্রেমিক হই। যেখানে ভারতীয় পণ্যের বিকল্প পণ্য থাকবে সেটা ব্যবহার করি। অন্য সীমের পাশাপাশি টেলিটক ব্যবহার শুরু করি। অন্য দেশ ঘুরে দেখার আগে নিজের দেশকে দেখি। নিজেদের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য তুলে ধরি।



সেইদিন বেশিদূরে নয় বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে অনেক শক্তিশালি হয়ে যাবে। আমাদের ছোট ছোট পদক্ষেপ আমাদের জন্যই সুফল নিয়ে আসবে।


পরিবর্তন হবেই, আমরা বদলালেই দেশ বদলাবে।






বিঃদ্রঃ লেখকের অনুমতি ব্যতিত এই পোস্ট কপি পেস্ট করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
পিছনের পাতাNewer Post পরের পাতাOlder Post Home