সাহসীদের গল্প



আসুন একটা গল্প শুনি, গল্পেই চলেন একটা শুটিংয়ের সেট থেকে ঘুরে আসি....


ব্যস্ত রাস্তা! ক্রিং ক্রিং করে বেল বাজিয়ে ছুটছে রিক্সা। সারি সারি দোকানপাট, হালিমের দোকান থেকে ভেসে আসছে হালিমের গন্ধ, হোটেলে সন্ধ্যার নাস্তা কিনতে ব্যস্ত কিশোরী, রাতের খাবারের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপাতি কিনে ব্যাগ চেক করছে অফিস ফেরত যুবক।

রাস্তার একপাশে দাঁড়িয়ে সিগারেট ফুঁকছে দুইজন পুলিশ। ইশারায় গতিরোধ করা হল দুই পথচারীর। সিগারেটটা নিভিয়ে দুইজনই এসেছেন চেক করতে। পথচারী দুই জনেরই গতিবিধি সন্দেহজনক। সাধারণ বাতচিত করে একজনকে চেক করা শুরু করে দিলেন, কোমর হাতরে চেক করার সময় পিস্তল টাইপ কিছুর অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। সতর্ক হওয়ার আগেই সন্ত্রাসীটা পিস্তল বের করে পুলিশের হাতেই চালিয়ে দিলো গুলি। আহত অবস্থায় একজন পুলিশ পড়ে রইলো, অপরজন প্রাণ রক্ষায় সন্ত্রাসীর পায়ে গুলি চালিয়ে দিলো। সন্ত্রাসীর হাত থেকে ছিটকে পড়ে গেল পিস্তল খানিকটা দূরে। এই যখন অবস্থা তখন অপর সন্ত্রাসীও তার পিস্তল বের করেছে গুলি চালাতে। পুলিশ-সন্ত্রাসী ধস্তাধস্তি চলছে। পুলিশের হাত এখন খালি, সন্ত্রাসীর হাতে পিস্তল। টানটান উত্তেজনা চলছে, আশপাশে উৎসুক মানুষের ভীড়। সবার কপালে একটাই চিন্তা এবার কে গুলি খাবে? নিরস্ত্র পুলিশ কি পারবে সন্ত্রাসীকে নিয়ন্ত্রণে নিতে? নাকি গুলি খেয়ে পড়ে রবে........ দেখা যাক কি হয়!


আচ্ছা! নায়ক কোথায়? এবার কি বিপদের বন্ধু হয়ে নায়ক উড়ে এসে বাঁচাবে না জনগণের বন্ধুকে? শেষ সময়ে কি নায়ক পারবে বাঁচাতে?


গল্পের এই পর্যায়ে একটু ক্ষমাচেয়ে নিচ্ছি। এটা কোন গল্প না, এটা কোন শুটিংয়ের সেটও না। এটা বাস্তব ঘটনা, যা ঘটেছিল গতরাতে আমার এলাকায়, আমার বাসার কাছেই।

চারিদিকে এতো মানুষ, তবুও কারো সাহস নেই সাহস করে এগিয়ে এসে পুলিশকে সাহায্য করার।

সিনেমায় বিপদে নায়ক এসে বিপদমুক্ত করে যায়, তবে কি আমাদের সমাজে কোন নায়ক নেই? নায়করা কি শুধু সিনেমাতেই থাকে?


না! নায়ক আছে। সমাজের নায়কদেরই প্রতিচ্ছবি আমরা সিনেমায় দেখি।

এমন সংকটময় মূহুর্তে সঠিক আর সাহসিক সিদ্ধান্ত নিতে দেড়ি করেনি দুই যুবক। তারা জীবনের ঝুঁকির কথা না ভেবে পিছন থেকে টান মেরে ফেলে দেয় সন্ত্রাসীকে, ছিটকে পড়ে যায় হাতের অস্ত্র। এরপর জাপটে ধরে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে দেয়।


এদের মত সাহসী মানুষদের জন্যই এখনো সন্ত্রাসীরা অবাধে বিচরণ করতে ভয় পায়, অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে এরাই এগিয়ে আসে সবার আগে। এরা নিরবে আসে, নিরবে প্রতিবাদ করে চলে যায়।

দর্শকদের হাত তালির জন্য এরা অপেক্ষা করে না। গন্তব্যের উদ্দেশ্যে হেটে চলে যেতে থাকে। উৎসুক জনতাকে দেখতে এরা পিছন ফিরে তাকায় না, কে জানে হয়তো কাপুরুষদের দেখার কোন ইচ্ছেই তাদের থাকে না।
বিঃদ্রঃ লেখকের অনুমতি ব্যতিত এই পোস্ট কপি পেস্ট করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
পিছনের পাতাNewer Post পরের পাতাOlder Post Home