ছেলেবেলায় এক বন্ধু তার খালি টিফিন বক্স দেখিয়ে ধার নিয়ে বলেছিল-
"ছুটির পর আম্মুর থেকে টাকা নিয়ে দিয়ে যাবো"
তারপর কত দিন ছুটি হলো, কিন্তু সেই বন্ধু টাকাটা
আর দিলোনা
তেইশ বছর প্রতিক্ষায় আছি।
মামা বাড়ির দাঁড়োয়ান নাদের আলী বলেছিল, তিন টাকা ধার দাও দাদাঠাকুর
তোমাকে আমি দ্বি-প্রহরেই শোধ করে দেবো
যখন মনিব গাড়ি বের করবে!
নাদের আলী, আমি আর কত অপেক্ষা করবো? মামা গাড়ি বের করে বিশ্ব ভ্রমণ করে আসলে তারপর তুমি আমার ধার শোধ করবে?
এক টাকার আচার কিনতে পারিনি কখনো
মিমি চকলেট আর আমসত্ত্ব দেখিয়ে দেখিয়ে চুষেছে লস্করবাড়ির ছেলেরা
ভিখারীর মতন চৌধুরীদের গেটে দাঁড়িয়ে দেখেছি
ভিতরে চড়ুইভাতি
ছোট ছোট মাটির চুলোয় লাকড়ি দিয়ে ভাত-সালুন রেঁধেছে বালিকারা
কত রকম ভর্তা বানিয়েছিল
আমাকে তারা একটুও ডাকেনি!
বান্ধবি আমার কাঁধ ছুঁয়ে বলেছিল, দেখিস, একদিন, আমরাও…
বান্ধবী এখন প্রবাসী, আমাদের খেলা হয়নি
সেই চড়ুইভাতি, সেই মিমি-আমসত্ত্ব, সেই ভর্তা-সালুন
আমায় কেউ ফিরিয়ে দেবেনা!
পত্রিকায় চাইনিজ মুঠোফোন দেখিয়ে ফাতেমা বলেছিল,
যেদিন আমায় সত্যিকারের ভালবাসবে
সেদিন আমার জন্যেও বড় ডিসপ্লের মোবাইল আনবে।
ভালোবাসার জন্য আমি কোচিংয়ের বেতন মেরেছি
বাবার পকেট থেকে সরিয়েছিলাম পাঁচশো টাকার দুটি নোট
গুলিস্তান মার্কেট তন্ন তন্ন করে খুঁজে এনেছিলাম বড় ডিসপ্লের নোকলা ফোন
তবু কথা রাখেনি ফাতেমা, এখন তার হাতে থাকে শুধুই আইফোন।
এখন সে যে-বড়লোকের স্ত্রী।
কেউ কথা রাখেনি, তেইশটি বছর কাটল, কেউ কথা রাখে না!
মূল কবিতা: কেউ কথা রাখেনি – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
তোমাকে আমি দ্বি-প্রহরেই শোধ করে দেবো
যখন মনিব গাড়ি বের করবে!
নাদের আলী, আমি আর কত অপেক্ষা করবো? মামা গাড়ি বের করে বিশ্ব ভ্রমণ করে আসলে তারপর তুমি আমার ধার শোধ করবে?
এক টাকার আচার কিনতে পারিনি কখনো
মিমি চকলেট আর আমসত্ত্ব দেখিয়ে দেখিয়ে চুষেছে লস্করবাড়ির ছেলেরা
ভিখারীর মতন চৌধুরীদের গেটে দাঁড়িয়ে দেখেছি
ভিতরে চড়ুইভাতি
ছোট ছোট মাটির চুলোয় লাকড়ি দিয়ে ভাত-সালুন রেঁধেছে বালিকারা
কত রকম ভর্তা বানিয়েছিল
আমাকে তারা একটুও ডাকেনি!
বান্ধবি আমার কাঁধ ছুঁয়ে বলেছিল, দেখিস, একদিন, আমরাও…
বান্ধবী এখন প্রবাসী, আমাদের খেলা হয়নি
সেই চড়ুইভাতি, সেই মিমি-আমসত্ত্ব, সেই ভর্তা-সালুন
আমায় কেউ ফিরিয়ে দেবেনা!
পত্রিকায় চাইনিজ মুঠোফোন দেখিয়ে ফাতেমা বলেছিল,
যেদিন আমায় সত্যিকারের ভালবাসবে
সেদিন আমার জন্যেও বড় ডিসপ্লের মোবাইল আনবে।
ভালোবাসার জন্য আমি কোচিংয়ের বেতন মেরেছি
বাবার পকেট থেকে সরিয়েছিলাম পাঁচশো টাকার দুটি নোট
গুলিস্তান মার্কেট তন্ন তন্ন করে খুঁজে এনেছিলাম বড় ডিসপ্লের নোকলা ফোন
তবু কথা রাখেনি ফাতেমা, এখন তার হাতে থাকে শুধুই আইফোন।
এখন সে যে-বড়লোকের স্ত্রী।
কেউ কথা রাখেনি, তেইশটি বছর কাটল, কেউ কথা রাখে না!
মূল কবিতা: কেউ কথা রাখেনি – সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
বিঃদ্রঃ লেখকের অনুমতি ব্যতিত এই পোস্ট কপি পেস্ট করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।